হাওজা নিউজ এজেন্সি: তিনি আজ কুরবানীর ঈদের নামাজের খুতবায় বলেন, “এই পবিত্র দিন আমাদের শিক্ষা দেয় যে পৃথিবী আল্লাহর পরীক্ষার স্থান, আর পরকাল হবে পূর্ণ হিসাব-নিকাশের দিন।”

সাহিবুজ্জামান (আ.) মসজিদে ঈদুল আজহার নামাজ শেষে প্রদত্ত বক্তৃতায় ইমামে জুমা বলেন, “কুরবানীর ঈদ হলো আল্লাহ তাআলার ইচ্ছার কাছে পূর্ণ সমর্পণ ও সন্তুষ্টির প্রকাশ। হযরত ইব্রাহিম (আ.)-এর জীবনের বহু পরীক্ষার মধ্যে হযরত ইসমাইল (আ.)-কে কুরবানীর আদেশ ছিল সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষা।”

তিনি হযরত আলী (আ.)-এর বাণী উদ্ধৃত করে বলেন, “দুনিয়া হলো আত্মশুদ্ধি ও প্রস্তুতির মাঠ, আর আখিরাত হলো সেই মহাপ্রতিযোগিতার দিন, যেখানে বিজয়ীরা জান্নাতের অনন্ত সুখ লাভ করবে। কুরবানীর ঈদ আমাদের এই মহাসত্যেরই স্মরণ করিয়ে দেয়।”

বক্তব্যে তিনি হযরত ইব্রাহিম (আ.)-এর জীবন থেকে শিক্ষণীয় দিকগুলো তুলে ধরেন: “বৃদ্ধ বয়সে লাভ করা প্রিয় পুত্র ইসমাইল (আ.)-কে কুরবানীর নির্দেশ পেয়ে ইব্রাহিম (আ.) যেমন বিন্দুমাত্র দ্বিধা না করে আল্লাহর হুকুম মেনে নিয়েছিলেন, তেমনি ১৩ বছরের কিশোর ইসমাইলও (আ.) পিতাকে বলেছিলেন, 'আপনি আল্লাহর যা আদেশ পেয়েছেন, তা-ই পালন করুন।'”

ইমামে জুমা কারবালার ইতিহাস স্মরণ করে বলেন, “এই আত্মসমর্পণের অনন্য দৃষ্টান্ত আমরা দেখি হযরত কাসিম (আ.)-এর মধ্যে, যিনি ইমাম হুসাইন (আ.)-কে বলেছিলেন, ‘চাচাজান! আল্লাহর পথে শাহাদাত আমার কাছে মধু থেকেও অধিক মিষ্টি।’ এটাই প্রমাণ করে যে কী অসম্ভব উচ্চতায় পৌঁছানো যায় আত্মোন্নয়নের মাধ্যমে।”

তিনি বর্তমান প্রজন্মের ত্যাগের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, “ইসলামী বিপ্লব রক্ষায় আমাদের অগণিত যুবক তাদের জীবন কুরবান করেছে। গতকাল ইমাম খোমেনী (রহ.)-এর মৃত্যুবার্ষিকীতে লক্ষাধিক তরুণ-তরুণীর উপস্থিতি প্রমাণ করে, এই ঈমানদার প্রজন্মের কাছে শত্রুদের সকল ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হতে বাধ্য।”

শেষে তিনি গুরুত্বপূর্ণ সতর্কতা দিয়ে বলেন, “কুরবানীর প্রকৃত শিক্ষা হলো এই উপলব্ধি যে সব অবস্থায় আল্লাহই আমাদের একমাত্র আশ্রয়স্থল। তাই তাঁর স্মরণ থেকে কখনই বিচ্ছিন্ন হওয়া চলবে না।”